ঢাকা   বৃহস্পতিবার, ২৬ ডিসেম্বর ২০২৪ | ১২ পৌষ ১৪৩১
২১ জনের বিরুদ্ধে দুদকে মামলা

মানিকগঞ্জে সই নকল করে ৩৩ কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগ

Daily Inqilab ইনকিলাব

০৫ ডিসেম্বর ২০২৪, ০৩:৫৩ পিএম | আপডেট: ০৫ ডিসেম্বর ২০২৪, ০৩:৫৩ পিএম

মানিকগঞ্জ জেলা ও দায়রা জজ আদালতের সাবেক হিসাব সহকারী ইমরান নাজিরের বিরুদ্ধে বিচারকদের সই নকল করে ভুয়া পেমেন্টের মাধ্যমে প্রায় ৩৩ কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগ উঠেছে। এই অবৈধ কাজে সহায়তাকারী হিসেবে জড়িত রয়েছেন জেলা হিসাব রক্ষণ অফিসের ডিএএফও (ডিস্ট্রিক এ্যাকাউন্টস এন্ড ফিন্যান্স অফিসার) নজরুল ইসলাম ও সুপার দেওয়ান ফেরদৌস ওয়াহিদ সহ জেলা আইনজীবী সমিতির ৬জন আইনজীবী এবং প্রধান অভিযুক্তের নিকট আত্মীয়স্বজন।

 


প্রাথমিকভাবে সরকারী টাকা আত্মসাতের অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় অভিযুক্ত ইমরান নাজিরকে চাকরি থেকে বরখাস্ত করেছে এবং জরিত চক্রের ২১ সদস্যর বিরুদ্ধে দুর্ণীতি দমন কমিশনে আদালতের পক্ষে বাদি হয়ে দায়রা জজ আদালতের ভারপ্রাপ্ত প্রশাসনিক কর্মকর্তা মো. সুজন শিকদার মামলা করেছেন ।

 

 

জানা গেছে, গত ৮ জুলাই ২০১৯ সাল থেকে ২২ আগষ্ট ২০২৪ সাল পর্যন্ত বরখাস্তকৃত ইমরান নাজির মানিকগঞ্জ জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারকদের সই নকল করে প্রিয়েমশন সহ চলমান ও নিষ্পত্তিকৃত বিভিন্ন মামলার ভুয়া পেমেন্ট অর্ডার তৈরি করে শতাধিক মানুষের ৩২ কোটি ৬০ লাখ ৩২ হাজার ৭৬৭ টাকা আত্মসাত করা হয়েছে। গত পাঁচ বছরে জালিয়াতির মাধ্যমে ২১ জনের ন্যাশনাল আইডি কার্ড দিয়ে খোলা ব্যক্তিগত অ্যাকাউন্টে ২১ লাখ থেকে শুরু করে ৩ কোটি টাকা পর্যন্ত ভুয়া পেমেন্টের মাধ্যমে হিসাব রক্ষণ অফিস থেকে চেক ইসু করে ব্যাংক থেকে তুলে নিয়ে গেছে।

 


এছাড়া অবৈধ এই কাজে সহায়তা করার অভিযোগ রয়েছে জেলা হিসাব রক্ষণ অফিসের ডিএএফও নজরুল ইসলাম,একই অফিসের সুপার দেওয়ান ফেরদৌস ওয়াহিদ, ইমরানের স্ত্রীর বড় ভাই রুবেল হোসেন, বোন জামাই আবুল হোসেন, চাচাতো ভাই হাবিবুর রহমান, ইমরান নাজিরের বন্ধু শরীফুল ইসলাম, ড্রাইভার জামাল ও ফুপা ঢাকা জজ কোর্টের আইনজীবী মুনসুর আলম,স্থানীয় বারের ৬জন আইনজীবী সহ ২১ জনের বিরুদ্ধে। বিষয়টি জানার পরবর্তীতে স্বাক্ষর জালিয়াতির বিষয়ে ইমরান নাজিরকে গত ০১.০৯.২৪ তারিখে কারণ দর্শানো নোটিশ দেন। ওই কারণ দর্শানো নোটিশ পাওয়ার পর ইমরান স্বাক্ষর জালিয়াতির বিষয়টি শিকার করেন। পরবর্তীতে হিসাব শাখার ভারপ্রাপ্ত বিচারক আসামী ইমরান নাজিরের কারণ দর্শানোর জবাবের ব্যখ্যা সন্তোষজনক নয় জানিয়ে গত ০৯ সেপ্টেম্বর ২৪ তারিখে জেলা জজ আসামী ইমরানের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহনের জন্য অফিসিশিয়াল স্মারকে পত্র প্রেরণ করে। এরপর জেলা ও দায়রা জজ আসামী ইমরান নাজিরের বিরুদ্ধে বিভাগীয় মামলা করেন (মামলা নং ০৪/২০ ৪। এবং আসামীর বিরুদ্ধে অভিযোগ গুরুত্বর বিবেচনা হওয়ায় গত ১৮ সেপ্টেম¦র ২৪ সালে ইমরানকে সাময়িক বরখাস্তের নির্দেশ দেন। পাশাপাশি জেলা ও দায়রা জজ আদালত আসামীর মাধ্যমে স্বাক্ষর জালিয়াতির মাধ্যমে কোন আর্থিক অনিয়ম সংঘটিত হয়েছে কিনা তা অনুসন্ধানের নির্দেশ প্রদান করেন।

 

 

মামলার এজাহার সুত্রে জানা গেছে, আদালতের হিসাব শাখায় রক্ষিত বিভিন্ন রেজিস্ট্রারের পর্যালোচনা করে দেখা গেছে, আসামী ইমরান নাজির সরকারী অর্থ আত্মসাতের নিমিত্ত বেশির ভাগ ক্ষেত্রে হিসাব বিভাগে রক্ষিত পুরাতন রেজিস্ট্রারকে টার্গেট করেন। সেখান থেকে যে সকল মামলার অর্থ ইতোমধ্যে উত্তোলন হয়েছে এবং কোন পক্ষ বা আইনজীবী আসার কারণ নেই সেই সকল মামলার বিপরীতে প্রদর্শিত অর্থের পরিমান ঘষামাজা এবং নয়ছয় করে নতুন অ্যামাউন্ট বসিয়ে অর্থ জালিয়াতি করে উত্তোলন করেন। নতুন চলমান মামলা থেকেও জালিয়াতি করে বিপুল পরিমান অর্থ অন্যান্য আসামীদের সাথে যোগসাজসে সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন আদালতের বিচারক,সেরেস্তাদার বেঞ্চ সহকারী,ভারপ্রাপ্ত বিচারক (নেজারত বিভাগ) বা ভারপ্রাপ্ত বিচারক (হিসাব বিভাগ) এর বিচারকদের স্বাক্ষর জাল করে চালান,পেমেন্ট অর্ডার ও অন্যান্য কাগজপত্র প্রস্তুত করেন। এরপর ইমরান নাজির অবৈধভাবে সরকারী অর্থ আত্মসাতের জন্য জেলা বারের অসাধু ৬জন আইনজীবী,নিকট আত্মীয়স্বজন,নিজের গাড়ির ড্রাইভারকে পক্ষ হিসেবে উপস্থাপন করেন।

 

 

মামলার এজাহার থেকে জানা গেছে, এজাহারের ৪ নম্বর আসামী আবুল হোসেনের জাতীয় ভোটার আইডি কার্ড দিয়ে খোলা ব্যক্তিগত অ্যাকাউন্টের মাধ্যমে ২০২২ সালের আগষ্ট মাস থেকে ২০২৩ সালের সেপ্টেম্বর মাস পর্যন্ত ২ কোটি ১৯ লাখ ৪০ হাজার ৮০ টাকা, ৫ নম্বর আসামী ইমরানের গাড়ির ড্রাইভার মো. জামালের ভোটার আইডি কার্ড দিয়ে খোলা ব্যক্তিগত অ্যাকাউন্টের মাধ্যমে ২০২২ সালের আগষ্ট মাস থেকে ২০২৩ সালের আগষ্ট মাস পর্যন্ত ১ কোটি ৫৯ লাখ ৬৭ হাজার ৮৪১ হাজার টাকা, ৬নম্বর আসামী মো, হাফিজুর রহমান ২০২৩ সালের জানুয়ারী থেকে ২০২৩ সালের সেপ্টেম্বর মাস পর্যন্ত তার জাতীয় ভোটার আইডি কার্ড দিয়ে খোলা ব্যক্তিগত অ্যাকাউন্টের মাধ্যমে ৬৮ লাখ ১৪ হাজার ৩০০ টাকা, ৭ নম্বর আসামী মো. রুস্তুম আলী ২০২২ সালের অক্টোবর মাস থেকে ২০২৩ সালের আগষ্ট মাস পর্যন্ত তার ব্যক্তিগত অ্যাকাউন্টের মাধ্যমে ১ কোটি ৬১ লাখ ২৭ হাজার ৮৯ টাকা, ৮ নম্বর আসামী মো. রুবেল হোসেন ২০২২ সালের জুলাই মাস থেকে ২০২৩ সালের আগষ্ট মাস পর্যন্ত তার ব্যক্তিগত অ্যাকাউন্টের মাধ্যমে ১ কোটি ২৫ লাখ ১৮ হাজার ৫১ টাকা, ৯ নম্বর আসামী মো. ফরিদ রায়হান ২০২৩ সালের মে মাস থেকে ২০২৩ সালের নভেম্বর মাস পর্যন্ত তার ব্যক্তিগত অ্যাকাউন্টের মাধ্যমে ৩১ লাখ ৪৭ হাজার টাকা,১০ নম্বর আসামী অ্যাডভোকেট আফরিন আক্তার মিম ২০২৩ সালের মে মাস থেকে ২০২৪ সালের ফেব্রয়ারী মাস পর্যন্ত তার ব্যক্তিগত অ্যাকাউন্টের মাধ্যমে ৫১ লাখ ৯ হাজার ৪৪৩ টাকা,১১ নম্বর আসামী মো. শরীফুল ইসলাম ২০২২ সালের জুন মাস ২০২৩ সালের সেপ্টম্বর মাস পর্যন্ত তার ব্যক্তিগত অ্যাকাউন্টের মাধ্যমে ৩ কোটি ৭৫ লাখ ১১ হাজার ৬৮৩ টাকা,১২ নম্বর আসামী মো. মুনসুর আলম ২০২৩ সালের জুলাই মাস থেকে ২০২৩ সালের নভেম্বর মাস পর্যন্ত তার ব্যক্তিগত অ্যাকাউন্টের মাধ্যমে ৩০ লাখ ৫১ হাজার ৭৯০ টাকা, ১৩ নম্বর আসামী কানন আক্তার ২০২৩ সালের মার্চ থেকে ২০২৩ সালের আগষ্ট মাস পর্যন্ত তার ব্যক্তিগত অ্যাকাউন্টের মাধ্যমে ৯৮ লাখ ২১ হাজার ৮০০ টাকা, ১৪ নম্বর আসামী হুমায়ন কবীর ২০২২ সালের মার্চ থেকে ২০২৩ সালের অক্টোবর মাস পর্যন্ত তার ব্যক্তিগত অ্যাকাউন্টের মাধ্যমে ৩ কোটি ৪৭ লাখ ৮৬ হাজার ৪৮৩ টাকা, ১৫ নম্বর আসামী মাহফুজুর রহমান মিটুল ২০২২ সালের এপ্রিল থেকে ২০২৪ সালের অক্টোবর পর্যন্ত তার ব্যক্তিগত অ্যাকাউন্টের মাধ্যমে ১ কোটি ৭৬ লাখ ৮৬ হাজার ৯৭০ টাকা, ১৬ নম্বর আসামী নিলুফা আক্তার ২০২২ সালের ২০২৩ সালের আগষ্ট মাস পর্যন্ত তার ব্যক্তিগত অ্যাকাউন্টের মাধ্যমে ১ কোটি ৪১ লাখ ৮০ হাজার ৬০৪ টাকা,১৭ নম্বর আসামী রেহেনা খানম ২০২২ সালের এপ্রিল মাস থেকে ২০২৩ সালের মার্চ মাস পর্যন্ত তার ব্যক্তিগত অ্যাকাউন্টের মাধ্যমে ১ কোটি ৪১ লাখ ৮০ হাজার ৬০৪ টাকা, ১৮ নম্বর আসামী অ্যাডভোকেট জেসমিন রহমান বিথী তার ব্যক্তিগত অ্যাকাউন্টের মাধ্যমে ৪৮ লাখ ৯১ হাজার ১১০ টাকা, ১৯ নম্বর আসামী আতিকুর রহমান ২০২৩ সালের মার্চ থেকে ২০২৩ সালের অক্টোবর পর্যন্ত তার ব্যক্তিগত অ্যাকাউন্টের মাধ্যমে বিভিন্ন মেয়াদে ১ কোটি ৬১ লাখ ৭৯ হাজার ৮৫৭ টাকা ও ২১ নম্বর আসামী মো. ফজলুল হক ২০২৪ সালের এপ্রিল মাসে তার ব্যক্তিগত অ্যাকাউন্টের মাধ্যমে ২১ লাখ টাকা উত্তোলন অবৈধ ভাবে উত্তোলন করে আত্মসাত করেছে।

 


সিঙ্গাইর উপজেলার বায়রা ইউনিয়ন পরিষদের পাঁচ নম্বর ওয়ার্ড সদস্য আব্দুস সামাদ মোল্লা। তিনি জেলা ও দায়রা জজ আদালতে কয়েক বছর আগে জমি সংক্রান্ত মামলায় ৪৬ হাজার টাকার কোর্ট ফির মাধ্যমে ২১ লাখ টাকা গচ্ছিত রাখেন। মামলা সমাধানের পর আদালতের পেমেন্ট অর্ডার নিয়ে জেলা হিসাব রক্ষণ অফিস থেকে চেক ইসু করতে গেলে সামাদ মোল্লাাকে নানাভাবে ঘুরাতে থাকে। এক পর্যায়ে তিনি জানতে পারেন আদালতের বিচারকদের সই নকল করে ভুয়া পেমেন্ট অর্ডারের মাধ্যমে সরকারী কোষাগারে রাখা তার গচ্ছিত রাখা টাকা তুলে নিয়ে গেছে। শুধু সামাদ মোল্লা নয় কোর্ট ফির মাধ্যমে আদালতে গচ্ছিত রাখা চলমান ও নিষ্পত্তি হওয়া বিভিন্ন মামলার শতাধিক বাদি-বিবাদির বিপুল অংকের টাকা আত্মসাৎ হয়ে গেছে।

 

 

সামাদ মোল্লা বলেন,জেলা দায়রা জজ আদালত সাধারন মানুষের আস্থার জায়গা। এই জায়গা থেকে থেকে যদি টাকা আত্মসাত হয়ে যায় তাহলে মানুষ কোথায় গিয়ে সেবা পাবে। তিনি বলেন, আমি ৪৬ হাজার টাকার কোর্ট ফি মাধ্যমে টাকা গচ্ছিত রেখেছি। এখন আমার টাকা কোথায় গেল। আমাকে টাকার জন্য প্রতিদিন ঘুরতে ঘুরতে এখন সংসার টিকিয়ে রাখা কষ্ট হচ্ছে। টাকা তুলতে গেলে কমপক্ষে পাঁচ হাত ঘুরতে হয়। মামলা নিষ্পত্তি হওয়ার পর আমি ৪/৫ হাত ঘুরে প্রেমেন্ট অর্ডার নিয়েছি। যারা আমার টাকা তুলে নিয়েছে তারা তো পাঁচ হাত ঘুরে নিয়েছে। এটা বিশাল চক্র আমি আমার টাকা পওয়ার জন্য প্রয়োজনে উচ্চ আদালতে গিয়ে মামলা করবো।

 


মামলার ৩ নম্বর আসামী হিসেবে ডিস্ট্রিক এ্যাকাউন্টস এন্ড ফিন্যান্স অফিসার (ডিএএফও) মো. নজরুল ইসলাম বলেন, একই বিল দুইবার প্রেমেন্ট হয়ে যাবে এ কারনে তাকে (আব্দুস সামাদ মোল্লা) ফিরিয়ে দেওয়া হয়েছে। আমাদের কাছে জজ কোট থেকে বিল আসে আমরা যাচাই করে,আমাদের যে পক্রিয়া আছে, অডিটরের কাছে প্রথমে জমা হবে,তাঁরা বিল দেখে শুনে সুপারের কাছে জমা দিবে,তারপর আমার টেবিলে আসলে চেক ইসু হবে। আমি জজ কোর্ট থেকে বিল পেয়েছি, তাদের বিল সঠিক বলে ইসু করেছি। তিনি বলেন, এ ঘটনায় আমার নামে এবং আমার অফিসের সুপার দেওয়ান ফেরদৌস ওয়াহিদের নামে যে মামলা হয়েছে তা আমরা জানি না। আপনাদের মাধ্যমে প্রথম জানতে পারলাম। তার দাবি তদন্ত শেষ না হওয়া পর্যন্ত এটা এভাবে বলা যাবে না, আদালতের টাকা তসরুফ হয়েছে।

 


এদিকে অভিযোগের বিষয়ে দুবাইতে পলাতক থাকা অভিযুক্ত কুষ্টিয়ার বাসিন্দা ইমরান নাজিরের সঙ্গে বার বার যোগাযোগের করা হয়েছে। তিনি বক্তব্য দিবেন বলে তিনদিন ঘুরিয়ে আর বক্তব্য দেননি। পরে তার স্ত্রীর সঙ্গে কথা হলে তিনি ঘটনার সত্যতা শিকার করে বলেন, আমার স্বামী ইমরান নাজির দুবাইতে আছে। মামলা হলে কি হবে,মূল ব্যক্তি তো নাই। আমার জানামতে ইমরানের কাকাতো ভাই হাবিবুর রহমান (২০ নম্বর আসামী) এবং ইমরানের বন্ধ শরীফুল ইসলাম (১১ নম্বর আসামী) মুল ব্যক্তি। এদের অ্যাকাউন্টের মাধ্যমে যতটাকা তোলা হয়েছে সব তারা নিয়ে ভেগে গেছে।তিনি বলেন, অতিরিক্ত টাকার বিষয়ে আমি সব সময় জিজ্ঞেস করতাম ইমরান বলতো তার জমিজমা এবং গাড়ির ব্যবসা আছে। এগুলো সব ব্যবসার টাকা। কিন্তু এই বিষয়গুলো আমি জানি না। ইমরানের টাকায় আমার কোন উন্নয়ন হয়নি। আমার ভাইয়ের মাধ্যমে যতটাকা তোলা হয়েছে সব তাকে দিয়ে দিয়েছে। আমি ইমরানের অপকর্মের দায় কেন নিব তাছাড়া হাবিবুর রহমান এবং শরীফুল ইসলাম ছাড়া তার অপকর্মের কথা কেউ জানতো না।
বিষয়টি সম্পর্কে দুর্ণীতি দমন কমিশনের মানিকগঞ্জের পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) মো, আজিজ উল্লাহ বলেন, আমার প্রায় ৫০ বছর উকালতির বয়স। এই ৫০ বছরের মধ্যে কখনো শুনিনি কোর্টের টাকা অন্যত্র চলে যায়। এটা আমার জন্য না,মানিকগঞ্জবাসীর জন্য না, এটা সারা বিচার বিভাগকে নাড়িয়ে তুলবে। এতদিনের মধ্যে পাবলিক জানে না, আমরা জানি না, যারা ঘটনা ঘটিয়েছে তারা তো ওই দিন থেকে জানেন। এটা পরিকল্পনা একদিনে হয় নাই। আইন তো নিজের গতিতে চলবে,তবে চলাটা যেন তরিৎ গতিতে হয়। এটা যেন হিমাগারে চলে না যায়।

 

 

জেলা জজ কোর্টের প্রাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) অ্যাডভোকেট নূরতাজ আলম বাহার। তিনি বলেন, এটা তো সরকারী টাকা এবং বিভিন্ন মামলা সংক্রান্ত টাকা। যারা প্রিয়মশন মামলা করে তাদের টাকা সহ ব্যক্তিগত ভাবে অনেকের টাকা এখানে সংরক্ষিত। সেই টাকাগুলো মামলা নিষ্পত্তি হওয়ার পর তারা তুলে নিয়ে যায়।তিনি বলেন, যেহেতু তারা এই টাকা আত্মসাত করেছে এইটা যখন দৃষ্টিগোচর হয়েছে তখন তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। এখন মামলায় তারা আসামী হিসেবে অন্তর্ভুক্ত হবেন এবং তারা এ মামলায় থাকলে আইনগত ভাবে এ সমস্থ বিষয়গুলো আছে সেগুলো দুর্ণীতি দমন কমিশন খতিয়ে দেখছে। এজাহারে নাম ছাড়াও বাইরে আরো কেউ যদি জরিত থাকে তারা আসামী হিসেবে অন্তভুক্ত হবেন।

 


এ বিষয়ে কথা হয় মামলার বাদি জেলা দায়রা জজ আদালতের ভারপ্রাপ্ত প্রশাসনিক কর্মকর্তা মো. সুজন শিকদার বলেন, পুর্বের কিছু মামলা যেগুলো নিষ্পত্তি হয়েছে সেগুলো থেকে, চলমান কিছু মামলা থেকে টাকা আত্মসাত করেছে। দেখা গেছে রানিং মামলায় জমা আছে পাঁচলাখ টাকা ইমরান ওইটায় বসিয়ে দিয়েছে ৫০ লাখ টাকা। ডিস্ট্রিক এ্যাকাউন্টস এন্ড ফিন্যান্স অফিসের কিছু অসাধু কর্মকর্তাকে ম্যানেজ করে পক্ষকে কিছু টাকা দিয়েছে এবং অতিরিক্ত টাকা আত্মসাৎ করেছে।তিনি বলেন, জেলা বারের কিছু আইনজীবীর সিল জাল করা হয়েছে তা দেখে মনে হচ্ছে কিছু আইনজীবী জড়িত রয়েছে।এগুলোর প্রাথমিক তদন্ত হয়েছে তদন্তে প্রাথমিক সত্যতা পাওয়া গেছে। এবিষয়ে সুজন শিকদার বাদি হয়ে দুর্ণীতি দমন কমিশনে ২১ জনের বিরুদ্ধে মামলা করেছে।


বিভাগ : বাংলাদেশ


মন্তব্য করুন

HTML Comment Box is loading comments...

এই বিভাগের আরও

বিএনপি কর্মীকে হত্যা মামলায় কুষ্টিয়ার সাবেক এসপি গ্রেপ্তার
কসবায় ৪ হাজার টাকার মোবাইল ফোনসেটের জন্য অটোচালক খুন
পরশুরামে মুহুরী নদীতে পানির পাম্প বসাতে দিচ্ছে না বিএসএফ
কালীগঞ্জে পানিতে ডুবে এক শিশুর মৃত্যু আরেক শিশু নিখোঁজ
কুমিল্লায় আন্তঃক্যাডার বৈষম্য নিরসন পরিষদের কর্মসূচি অনুষ্ঠিত
আরও

আরও পড়ুন

প্রসিকিউটর মাহমুদকে হত্যার হুমকির অভিযোগ

প্রসিকিউটর মাহমুদকে হত্যার হুমকির অভিযোগ

বিএনপি কর্মীকে হত্যা মামলায় কুষ্টিয়ার সাবেক এসপি গ্রেপ্তার

বিএনপি কর্মীকে হত্যা মামলায় কুষ্টিয়ার সাবেক এসপি গ্রেপ্তার

মধ্যরাতে সচিবালয়ে অগ্নিকাণ্ড নিয়ে যেসব প্রশ্নের উত্তর খুঁজছেন মানুষ

মধ্যরাতে সচিবালয়ে অগ্নিকাণ্ড নিয়ে যেসব প্রশ্নের উত্তর খুঁজছেন মানুষ

‘সচিবালয়ের ন্যায় দেশটাও কি অরক্ষিত?’

‘সচিবালয়ের ন্যায় দেশটাও কি অরক্ষিত?’

কসবায় ৪ হাজার টাকার মোবাইল ফোনসেটের জন্য অটোচালক খুন

কসবায় ৪ হাজার টাকার মোবাইল ফোনসেটের জন্য অটোচালক খুন

পরশুরামে মুহুরী নদীতে পানির পাম্প বসাতে দিচ্ছে না বিএসএফ

পরশুরামে মুহুরী নদীতে পানির পাম্প বসাতে দিচ্ছে না বিএসএফ

বগুড়া কারাগারে হার্ট এ্যাটাকে আওয়ামী লীগ  নেতাদের সিরিয়াল মৃত্যু নানামুখি প্রশ্ন

বগুড়া কারাগারে হার্ট এ্যাটাকে আওয়ামী লীগ নেতাদের সিরিয়াল মৃত্যু নানামুখি প্রশ্ন

যতবার বাংলাদেশে সুষ্ঠু ভোট হয়েছে, ততবার বিএনপি সরকার গঠন করেছে: এবিএম মোশাররফ

যতবার বাংলাদেশে সুষ্ঠু ভোট হয়েছে, ততবার বিএনপি সরকার গঠন করেছে: এবিএম মোশাররফ

সচিবালয়ে অগ্নিকান্ডের ঘটনায় ষড়যন্ত্র আছে: সারজিস আলম

সচিবালয়ে অগ্নিকান্ডের ঘটনায় ষড়যন্ত্র আছে: সারজিস আলম

শীর্ষ ফুটবলে নিজেকে আরও কয়েক বছর দেখেন ফন ডাইক

শীর্ষ ফুটবলে নিজেকে আরও কয়েক বছর দেখেন ফন ডাইক

কালীগঞ্জে পানিতে ডুবে এক শিশুর মৃত্যু আরেক শিশু নিখোঁজ

কালীগঞ্জে পানিতে ডুবে এক শিশুর মৃত্যু আরেক শিশু নিখোঁজ

কুমিল্লায় আন্তঃক্যাডার বৈষম্য নিরসন পরিষদের কর্মসূচি অনুষ্ঠিত

কুমিল্লায় আন্তঃক্যাডার বৈষম্য নিরসন পরিষদের কর্মসূচি অনুষ্ঠিত

মির্জাপুরে বনের ভেতর গড়ে উঠা ৯টি ঘর উচ্ছেদ

মির্জাপুরে বনের ভেতর গড়ে উঠা ৯টি ঘর উচ্ছেদ

সচিবালয়ে আগুন ও আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি সরকার ও গোয়েন্দা সংস্থা দায় এড়াতে পারেনা - এবি পার্টি

সচিবালয়ে আগুন ও আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি সরকার ও গোয়েন্দা সংস্থা দায় এড়াতে পারেনা - এবি পার্টি

পথশিশুদের মাঝে উষ্ণতা ছড়িয়ে দিয়েছে সামাজিক সংগঠন আলোকিত নরসিংদী

পথশিশুদের মাঝে উষ্ণতা ছড়িয়ে দিয়েছে সামাজিক সংগঠন আলোকিত নরসিংদী

কুলাউড়ায় বিসিএস ডাক্তারদের মানববন্ধন

কুলাউড়ায় বিসিএস ডাক্তারদের মানববন্ধন

ইসলামিক ফাউন্ডেশনের ডিজির সাথে  ইসলামী  বিশ্ববিদ্যালয়ের নেতৃবৃন্দের সৌজন্য  সাক্ষাত

ইসলামিক ফাউন্ডেশনের ডিজির সাথে ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের নেতৃবৃন্দের সৌজন্য সাক্ষাত

ভারতীয় খাসিয়ার গুলিতে সিলেট  সীমান্তে নিহত এক তরুন : বিজিবির প্রতিবাদ

ভারতীয় খাসিয়ার গুলিতে সিলেট  সীমান্তে নিহত এক তরুন : বিজিবির প্রতিবাদ

যারা নির্বাচনী অপরাধ করেছেন তাদের বিচার হওয়া  উচিত: বদিউল আলম মজুমদার

যারা নির্বাচনী অপরাধ করেছেন তাদের বিচার হওয়া উচিত: বদিউল আলম মজুমদার

ট্রাকচাপায় ফায়ার ফাইটার নিহতের ঘটনায় মামলা

ট্রাকচাপায় ফায়ার ফাইটার নিহতের ঘটনায় মামলা